ঘোলা জলে মাছ শিকার
ঘোলা জলে মাছ শিকার
: শালা আমার জিনিসে হাত দিসে। আমি ওরে খায়া ফালামু।
সিগারেটে টান দিয়ে ধোয়ার কুন্ডলি বাতাসে ছেড়ে ক্রোধে কাঁপতে কাঁপতে কথাগুলো বলে জসিম। সূর্য্য ও রাজিব জসিমকে শান্ত করার চেষ্টা করে।
: দোস্ত এতো চাপ নিস না। সুযোগ মতো শালারে সাইজ কইরা দিলেই হইবো।
: কিসের সুযোগ? আমি নিজে ওরে কইছি- সীমা রে আমি ভালোবাসি। সীমা'র জীবন থাইক্যা সইরা যা। শালার কলিজা কত ! আমারে শাসায়!
জসিমের ক্রোধের আগুনে ঘি ঢেলে দেয় সূর্য্য-
: হ, বেশি বাইড় বাড়ছে শালা। শালার ঠ্যাং কাইট্টা হাতে ধরায় দিমু আমি। আমারেও সেদিন উল্টা পাল্টা শাসায়ছে।
: দোস্ত, এখন সময়ডা ভালো না। বলের চাইতে কৌশল শ্রেয়। নির্বোধের মতো ফালাফালি করিস না।
রাজিব চোখে মুখে বিজ্ঞতার ছাপ ফুটিয়ে তুলে আরো কিছু বলতে যাচ্ছিল, কিন্তু সূর্য্য তাকে থামিয়ে দেয়- ' না না, শালা ফালাফালির দেখছেডা কি?'
সিগারেটে লম্বা টান দিয়ে মুড়িটা ছুঁড়ে ফেলে দেয় জসিম। রক্তের মতো লাল চোখ মেলে রাজিবের দিকে তাকায়।
: আল্লার কসম, সীমা'র পথ থাইক্যা চির দিনের জন্যে ওরে ছাইট্টা দিমু আমি।
: দোস্ত,সময়ডা ভালো না........
রাজিবের কথা শেষ না হতেই জসিম এবারও তাকে থামিয়ে দেয়-
: আরে রাখ তোর সময়। শালা নিজেরে ভাবেডা কি?
এতোক্ষণ যাবৎ যে ৩ জনের কথোপকথন হচ্ছিল তারা বড় লোকের বকে যাওয়া তিন সন্তান। সুমন তাদেরই বন্ধু।
জসিম সুমনকে বার বার হুমকি দিয়ে আসছে,সে যেন সীমার জীবন থেকে সরে দাড়ায়। সুমন উল্টো হুমকি দেয়াতেই বিপত্তির শুরু।
প্রতিদিনের মতো সুমন কলেজ শেষে বাসায় ফিরছিল। জসিম তার তিন সহযোগি নিয়ে সুমনের পথ আটকায়।
উদ্ধতভাবে সে সুমনকে শাসাতে থাকে। সুমন তাকে স্ট্রেট জানিয়ে দেয়- সীমা তাকে ভালোবাসে। কিছু করার থাকলে তারা যেন করে ।
জসিম অগ্নিশর্মা হয়ে সুমনের কলার চেপে ধরে। সুমন জসিমের গালে কষে একটা থাপ্পর দেয়। জসিমের মাথায় রক্ত উঠে যায়। সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি এড়াতে রাজিব দুজনকেই থামায়।
"সরি" বলে সুমনকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় রাজিব।
রাজিবের নতজানু আচরণে জসিম ও রাজিব ক্ষেপে যায়।
রাজিব তার বিজ্ঞবচনের পুনরাবৃত্তি করে- 'দোস্ত, বলের চাইতে কৌশল শ্রেয়।'
জসিম তাকে সাফ জানিয়ে দেয়, সে সুমন কে খুন করবেই। কিন্তু কিভাবে কাজটা করা যায়? জসিম রাজিবের দিকে তাকায়।
রাজিব আকাশের দিকে মুখ করে চেহারায় বিজ্ঞতার ছাপ এনে শান্ত সুরে বলে,
: বলতে চাইছিলাম, বলের চেয়ে কৌশল শ্রেয়।
রাজিবের মাথায় কোন কুটবুদ্ধি এলে সে এরকম বুদ্ধিজীবির পার্ট নেয়।
: তর কি কোন প্লান আছে দোস্ত?- সূর্য্য জানতে চায়।
: আছে।
: কি রকম?
: ব্লু হোয়েল গেম।
: মানে?
: সাপ মরবো, তয় লাঠি ভাঙ্গবো না।
রাজিবের কথা তাদের মাথায় ঢোকে না। জসিম ধমকে ওঠে- ' ভুমিকা রাখ। প্লানটা কি বল। এইডা মসকরা করার টাইম না।'
এবার রাজিব তার প্লানটা ক্লিয়ার করার চেষ্টা করে।
: শোন দোস্ত, চারদিকে ব্লু হোয়েল গেম নিয়া শোরগোল চলতাছে।
এই গেমের ৫০ লেভেলে আইসা নাকি পোলাপান ছাদে থাইক্যা লাফ মাইরা মইরা যায়। শুনছস?
সূর্য্য মাথা নাড়ে-
: হ, ফেসবুকে এইডা নিয়া বহু মাতামাতি চলতাছে। আইজও নাকি একটা মরছে ,পেপারে দেখলাম।
জসিম এবার ধৈর্য্য হারায় -
: এই সব কতার মানেটা কি?
: আছে।
: কি রকম?
: সুমনরে ব্লু হোয়েল গেমের ঘোলা পানিতে শিকার করতে হইবো।
: কেমনে?
: গভীর রাইতে কৌশলে ওরে ছাদে ডাইকা নিতে হইবো।
তার পরে চেতনা নাশক ওষুধ মেশানো রুমাল নাকে চাইপা ধরতে হইবো।
অজ্ঞান করার পর ব্লেড দিয়া খুচাইয়া তিমি মাছের ছবি আঁকতে হইবো তার হাতে। ঠোটে সুচ ফোটাইতে হইবো।
পকেটে একটা চিরকুট ঢুকায়া দিতে হইবো যাতে লেহা থাকবো-None is responsible for my death...
তার পর ছাদ থাইক্যা ওরে নিচে ফালায়া দিলেই কেল্লা ফতে...
"সাবাস বেটা।"- জসিম উচ্ছ্বসিত হয়ে রাজিবের পিঠ চাপরে দেয়।
রাজিব তার চেহারায় স্বভাব সুলভ বিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে বিকৃত হাসি হেসে বলে- 'বলের চাইতে কৌশল শ্রেয়।'
পরের দিন রাতের বেলা রাজিব সমঝোতার কথা বলে সুমনকে তিন তলার ছাদে ডেকে নেয়।
পূর্ব পরিকল্পনা মতো সুমন কে অজ্ঞান করে তার হাতে ব্লেড দিয়ে খুঁচিয়ে হাতে নীল তিমি এঁকে দেয়া হয়। ঠোটে সুচ ফুটিয়ে ক্ষত সৃষ্টি করা হয়।
পকেটে সুইসাইড নোটটি রেখে ছাদ থেকে নিচে ছুঁড়ে ফেলে দেয়া হয় সুমনকে।
পরের দিন আবারও ফেসবুকে তোলপার উঠে। দেশের বড় বড় পত্রিকায় বড় বড় হেড লাইনে খবর বের হয় - 'ব্লু হোয়েলে গেমে আরো এক তরুণের আত্বাহুতি।
post:মাঈদুল ইসলাম মুকুল
: শালা আমার জিনিসে হাত দিসে। আমি ওরে খায়া ফালামু।
সিগারেটে টান দিয়ে ধোয়ার কুন্ডলি বাতাসে ছেড়ে ক্রোধে কাঁপতে কাঁপতে কথাগুলো বলে জসিম। সূর্য্য ও রাজিব জসিমকে শান্ত করার চেষ্টা করে।
: দোস্ত এতো চাপ নিস না। সুযোগ মতো শালারে সাইজ কইরা দিলেই হইবো।
: কিসের সুযোগ? আমি নিজে ওরে কইছি- সীমা রে আমি ভালোবাসি। সীমা'র জীবন থাইক্যা সইরা যা। শালার কলিজা কত ! আমারে শাসায়!
জসিমের ক্রোধের আগুনে ঘি ঢেলে দেয় সূর্য্য-
: হ, বেশি বাইড় বাড়ছে শালা। শালার ঠ্যাং কাইট্টা হাতে ধরায় দিমু আমি। আমারেও সেদিন উল্টা পাল্টা শাসায়ছে।
: দোস্ত, এখন সময়ডা ভালো না। বলের চাইতে কৌশল শ্রেয়। নির্বোধের মতো ফালাফালি করিস না।
রাজিব চোখে মুখে বিজ্ঞতার ছাপ ফুটিয়ে তুলে আরো কিছু বলতে যাচ্ছিল, কিন্তু সূর্য্য তাকে থামিয়ে দেয়- ' না না, শালা ফালাফালির দেখছেডা কি?'
সিগারেটে লম্বা টান দিয়ে মুড়িটা ছুঁড়ে ফেলে দেয় জসিম। রক্তের মতো লাল চোখ মেলে রাজিবের দিকে তাকায়।
: আল্লার কসম, সীমা'র পথ থাইক্যা চির দিনের জন্যে ওরে ছাইট্টা দিমু আমি।
: দোস্ত,সময়ডা ভালো না........
রাজিবের কথা শেষ না হতেই জসিম এবারও তাকে থামিয়ে দেয়-
: আরে রাখ তোর সময়। শালা নিজেরে ভাবেডা কি?
এতোক্ষণ যাবৎ যে ৩ জনের কথোপকথন হচ্ছিল তারা বড় লোকের বকে যাওয়া তিন সন্তান। সুমন তাদেরই বন্ধু।
জসিম সুমনকে বার বার হুমকি দিয়ে আসছে,সে যেন সীমার জীবন থেকে সরে দাড়ায়। সুমন উল্টো হুমকি দেয়াতেই বিপত্তির শুরু।
প্রতিদিনের মতো সুমন কলেজ শেষে বাসায় ফিরছিল। জসিম তার তিন সহযোগি নিয়ে সুমনের পথ আটকায়।
উদ্ধতভাবে সে সুমনকে শাসাতে থাকে। সুমন তাকে স্ট্রেট জানিয়ে দেয়- সীমা তাকে ভালোবাসে। কিছু করার থাকলে তারা যেন করে ।
জসিম অগ্নিশর্মা হয়ে সুমনের কলার চেপে ধরে। সুমন জসিমের গালে কষে একটা থাপ্পর দেয়। জসিমের মাথায় রক্ত উঠে যায়। সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি এড়াতে রাজিব দুজনকেই থামায়।
"সরি" বলে সুমনকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় রাজিব।
রাজিবের নতজানু আচরণে জসিম ও রাজিব ক্ষেপে যায়।
রাজিব তার বিজ্ঞবচনের পুনরাবৃত্তি করে- 'দোস্ত, বলের চাইতে কৌশল শ্রেয়।'
জসিম তাকে সাফ জানিয়ে দেয়, সে সুমন কে খুন করবেই। কিন্তু কিভাবে কাজটা করা যায়? জসিম রাজিবের দিকে তাকায়।
রাজিব আকাশের দিকে মুখ করে চেহারায় বিজ্ঞতার ছাপ এনে শান্ত সুরে বলে,
: বলতে চাইছিলাম, বলের চেয়ে কৌশল শ্রেয়।
রাজিবের মাথায় কোন কুটবুদ্ধি এলে সে এরকম বুদ্ধিজীবির পার্ট নেয়।
: তর কি কোন প্লান আছে দোস্ত?- সূর্য্য জানতে চায়।
: আছে।
: কি রকম?
: ব্লু হোয়েল গেম।
: মানে?
: সাপ মরবো, তয় লাঠি ভাঙ্গবো না।
রাজিবের কথা তাদের মাথায় ঢোকে না। জসিম ধমকে ওঠে- ' ভুমিকা রাখ। প্লানটা কি বল। এইডা মসকরা করার টাইম না।'
এবার রাজিব তার প্লানটা ক্লিয়ার করার চেষ্টা করে।
: শোন দোস্ত, চারদিকে ব্লু হোয়েল গেম নিয়া শোরগোল চলতাছে।
এই গেমের ৫০ লেভেলে আইসা নাকি পোলাপান ছাদে থাইক্যা লাফ মাইরা মইরা যায়। শুনছস?
সূর্য্য মাথা নাড়ে-
: হ, ফেসবুকে এইডা নিয়া বহু মাতামাতি চলতাছে। আইজও নাকি একটা মরছে ,পেপারে দেখলাম।
জসিম এবার ধৈর্য্য হারায় -
: এই সব কতার মানেটা কি?
: আছে।
: কি রকম?
: সুমনরে ব্লু হোয়েল গেমের ঘোলা পানিতে শিকার করতে হইবো।
: কেমনে?
: গভীর রাইতে কৌশলে ওরে ছাদে ডাইকা নিতে হইবো।
তার পরে চেতনা নাশক ওষুধ মেশানো রুমাল নাকে চাইপা ধরতে হইবো।
অজ্ঞান করার পর ব্লেড দিয়া খুচাইয়া তিমি মাছের ছবি আঁকতে হইবো তার হাতে। ঠোটে সুচ ফোটাইতে হইবো।
পকেটে একটা চিরকুট ঢুকায়া দিতে হইবো যাতে লেহা থাকবো-None is responsible for my death...
তার পর ছাদ থাইক্যা ওরে নিচে ফালায়া দিলেই কেল্লা ফতে...
"সাবাস বেটা।"- জসিম উচ্ছ্বসিত হয়ে রাজিবের পিঠ চাপরে দেয়।
রাজিব তার চেহারায় স্বভাব সুলভ বিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে বিকৃত হাসি হেসে বলে- 'বলের চাইতে কৌশল শ্রেয়।'
পরের দিন রাতের বেলা রাজিব সমঝোতার কথা বলে সুমনকে তিন তলার ছাদে ডেকে নেয়।
পূর্ব পরিকল্পনা মতো সুমন কে অজ্ঞান করে তার হাতে ব্লেড দিয়ে খুঁচিয়ে হাতে নীল তিমি এঁকে দেয়া হয়। ঠোটে সুচ ফুটিয়ে ক্ষত সৃষ্টি করা হয়।
পকেটে সুইসাইড নোটটি রেখে ছাদ থেকে নিচে ছুঁড়ে ফেলে দেয়া হয় সুমনকে।
পরের দিন আবারও ফেসবুকে তোলপার উঠে। দেশের বড় বড় পত্রিকায় বড় বড় হেড লাইনে খবর বের হয় - 'ব্লু হোয়েলে গেমে আরো এক তরুণের আত্বাহুতি।
post:মাঈদুল ইসলাম মুকুল
No comments